ঝিনাইগাতির বিষ্ণুপু‌রে সরকারী জায়গা বিক্রি,পাকা ভবন নির্মাণ 


editor প্রকাশের সময় : ১৬/০২/২০২৩, ৮:০৯ পূর্বাহ্ণ /
ঝিনাইগাতির বিষ্ণুপু‌রে সরকারী জায়গা বিক্রি,পাকা ভবন নির্মাণ 

ফজলুল ক‌রিম শেরপুর সংবাদদাতা।

লাখ লাখ টাকায় বিক্রয় হয়ে যাচ্ছে সরকারী জায়গা। সেখানে প্রভাবশালী দখলদারদের মোটা অংকের টাকা জামানত ও মাসিক ভাড়া দিয়ে ব্যবসা করতে বাধ্য হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। সম্প্রতি হিড়িক পড়েছে পাকা ভবন নির্মাণের। পাশাপাশি চলছে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে জায়গা বিক্রয়। ঘটনাটি শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের চরণতলা বাজারের। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে সেখানে নতুন করে কয়েকটি পাকা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। বিষয়টি অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে এসব তথ্য।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এরশাদ মিয়া ও রুবেল মিয়া নতুন করে পাকা ভবন নির্মাণ করছেন। ভবন নির্মাণকারী এরশাদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিগত ৯ বছর থেকে তিনি ওই জায়গায় টিনের ছাপড়া ঘর ভাড়া নিয়ে দোকান চালিয়ে আসছেন। সম্প্রতি তিনি জায়গাটি আসাদ খন্দকারের নিকট থেকে কিনে নিয়েছেন। সরকারি জায়গা কিনে নেয়া এবং পাকা ভবন নির্মাণ করা ভুল হয়েছে বলে স্বীকার করলেও তিনি দাবি করেন, ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে থেকে অনুমতি নিয়েছেন।সপক্ষে কোন প্রমাণ দেখাতে পারেননি তিনি।বিষ্ণুপুর গ্রামের তুহিন, আলম, খোরশেদ, মোস্তাক, রাসেল, জাহাঙ্গীর, হারুণ ও কাংশা গ্রামের তৌহিদ, শাহীন, মস্তুফা আগেই বিল্ডিং নির্মাণ করেছেন। এছাড়াও মালাকুচা গ্রামের রহীম, পলাশ, নাচনমহুরীর মস্তুফা, হালুয়াহাটির মাসুদ, সোহেল বিষ্ঞুপুরের আবু সালেহ, জাকির মাওলানা, কাংশা গ্রামের উজ্জ্বল, আসছানউল্লাহ সহ শাহজাহান, সোনা মিয়া, মিজানরা অবৈধভাবে ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিয়ে রেখেছেন আবার কেউবা নিজেই দোকান চালাচ্ছেন।শফিকুল দোকানদার বলেন, তিনি তার দোকান ঘরটি জনৈক জাকির মাওলানার কাছে থেকে জামানত নিয়ে ভাড়া নিয়েছেন এবং গত তিন চার বছর থেকে নিয়মিত মাসিক ভাড়ার টাকা দিয়ে যাচ্ছেন জাকির মাওলানাকে।কথা হয় কাংশা ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি আব্দুল আজিজ ধুলু ও চরণতলা মন্দির ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি পিযুশ মোদক এর সাথে। তাঁরা দাবি করেন অবৈধ দখলমুক্ত করে সরকারিভাবে শেড নির্মাণের। সেখানে প্রকৃত ব্যবসায়ীদের দোকান বরাদ্দ দেয়া হলে তারা যেমন উপকৃত হবেন তেমনি সরকারের বড় অংকের টাকা রাজস্ব আদায় হবে।এলাকার প্রবীন ব্যক্তি চাঁন মিয়া বলেন, এরশাদ আলী বাজারের পাশের বাসিন্দা প্রভাবশালী আসাদ খন্দকারের (অব: আর্মি) কাছ থেকে জায়গাটির পজেশন কিনে নিয়ে পাকা বিল্ডিং উঠাচ্ছে। সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মরহুম খন্দকার মোহাম্মদ খুররম সাহেব ১৯৮৮ খ্রি: ২৫ শতক জমি কিনে বাজারটি প্রতিষ্ঠা করে দিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে টিনের ঘর নির্মাণ করে জায়গা দখল করা শুরু হয়। এখন সেই জায়গা লক্ষ লক্ষ টাকায় কেনাবেচা হচ্ছে এবং পাকা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।এবিষয়ে আসাদ খন্দকার ৫ লক্ষ টাকা মূল্যে জায়গাটি বিক্রয়ের কথা স্বীকার করে জানান, সেখানে একটি টিনের ছাপড়া ঘরে তার ছেলে দোকান চালাতো। পরে জায়গাটি অন্তত ১০ বছর ধরে ভাড়া দিয়ে রেখেছিলেন। গত ৩ মাস আগে এরশাদ আলীর কাছে ৫ লাখ টাকায় জায়গাটির পজিশন বিক্রি করেছেন বলে জানান তিনি।কাংশা ইউনিয়নের তহশীলদার মাহবুবুর রহমানের কাছে জানতে চাওয়া হয়, অবৈধভাবে বাজারের সরকারি জায়গা বিক্রয় এবং ভবন নির্মাণকারীদের বিষয়ে কি পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি। জবাবে তিনি অবৈধ দখলদার এরশাদের সুরে বলেন, ঝিনাইগাতীর ইউএনওর নির্দেশেই নির্মাণ কাজ চলছে।এবিষয়ে জানতে চাইলে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ফারুক আল মাসুদ বলেন, “আগে থেকেই বাজারটিতে কিছু টিনের ঘর নির্মাণ করে কতিপয় দোকানদার দোকান চালিয়ে আসছেন, ওখানে পাকা ভবন নির্মাণের অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করে ভবন নির্মাতাকে তা ভেঙে আগের মতো করে টিনের ছাপড়া নির্মানের অনুমতি দেয়া হয়েছে মাত্র। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর মাধ্যমে তদন্ত করে পাকা ভবন নির্মাণের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব‌্যবস্থা নেয়া হবে।