গমের কাঁচা-পাকা শীষে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন


editor প্রকাশের সময় : ১৯/০২/২০২৩, ১:৩৭ অপরাহ্ণ /
গমের কাঁচা-পাকা শীষে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন

মোঃ‌লিটন মাহমুদ ,মুন্সীগঞ্জ প্রতি‌নি‌ধিঃ

সবুজ মাঠের দিকে তাকালে দেখা যায়, গমের কাঁচা-পাকা শীষ বাতাসে দোল খাচ্ছে। সোনালী রোদে চিকচিক করছে প্রতিটি গমের শীষ। আর কাঁচা-পাকা শীষের সাথে চাষির মন ও শরীরও দোল খাচ্ছে। সবুজ মাঠের দিকে তাকিয়ে কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছে হাসি। এযেন এক অনাবিল তৃপ্তির হাসি। আগামী ১০ থেকে ১৫ দিন পর জমি থেকে চাষিরা গম কাটা শুরু করতে পারবেন। আর তখন কৃষকের স্বপ্ন মিশে যাবে সোনালী গমের শীষে।রবি শস্যের মধ্যে অন্যতম একটি লাভজনক আবাদ হচ্ছে গম। বর্তমানে গমের বাজার ভালো থাকায় গম চাষে লাভের আশা করছেন চাষিরা।এ বছর টঙ্গীবাড়ী উপ‌জেলায় গমের বাম্পার ফলন আশা কর‌ছেন কৃষ‌কেরা । গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর গমের ফলন বেশি ভালো হয়েছে। গম ক্ষেতে কোনো ধরণের রোগ-বালাই না হওয়ার কারণে বিঘা প্রতি আগের তুলনায় ফলন বেড়েছে।কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে ৪৫০ হেক্টর জমিতে কৃষক গম চাষ করেন। অধিকাংশ জমিতে কৃষক উচ্চ ফলনশীল জাত হিসেবে পরিচিত বারি-৩০, ৩২ ও ৩৩ রোপণ করেছেন। এছাড়া বারি-২৫, ২৭ ও ২৮ জাতের গমও চাষ করা হয়েছে। গমের ১০টি প্রদর্শনী প্লটও রয়েছে।অনুকূল আবহাওয়া এবং কৃষি বিভাগের সঠিক তদারকি ও পরামর্শে গম ক্ষেতে কোনো রোগবালাই ছিলো না। তাই গমের বাম্পার ফলন পাওয়ার ব‌্যপা‌রে কৃষক‌েরা খুবই আশাবা‌দি ।টঙ্গীবাড়ী উপজেলার যশলং ইউ‌নিয়নের বায়হাল, , নয়াকান্দী,চর বশনাল,ধীপুর ইউ‌নিয়‌নের রায়‌ভোগ,মটুকপুর,বেতকা ইউ‌নিয়‌নের বেতকাচক সহ অন্যান্য ইউনিয়নেও বিক্ষিপ্তভাবে গমের আবাদ হয়েছে। তবে নয়াকান্দী ,আটখান ,বায়হালচ‌কে গমের আবাদি বেশি হয়েছে।নয়াকান্দী,চর বশনাল,রায়‌ভোগ গ্রামের গমচাষি ইলিয়াস কাঞ্চন, আব্দুল মতিন, বাবুল, ইসলাম উদ্দিন, আব্দুস সামাদ, আবু তাহের, ইদ্রিসসহ অনেকেই জানান, বিগত সময়ের চেয়ে এবার গমের দানা খুব ভালো এসেছে। প্রতিটি শীষ অনেক বড় হয়েছে। যদি আবহাওয়া শেষ পর্যন্ত গমের অনুকূলে থাকে ও গমের বাজার ভালো থাকে তাহলে চাষিরা লাভবান হবেন।গম চাষে বীজ, কীটনাশক ও দিনমজুরসহ ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা খরচ হলেও বিঘাপ্রতি ৭ থেকে ৮ মণ গম পাবেন বলে জানান চাষিরা। প্রতি মণ গম বর্তমান বাজার দর ১ হাজার ২ শত টাকারও বেশি, তাই বিঘা প্রতি প্রায় ১০ হাজার টাকার গম বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান কৃষকেরা।গম চাষ একটি অধিক লাভজনক আবাদ। গম চাষে তেমন পানি, সার, কীটনাশক, বালাইনাশক ও নিড়ানীর প্রয়োজন হয় না এতে খরচ অনেক কম। আর কম পরিশ্রমে অধিক লাভ করা যায়। এছাড়াও গমে পোকা-মাকড়ের আক্রমণও তেমন একটা হয় না। গম গাছ জ্বালানি ও বেড়া হিসেবে ব্যবহার করা যায়।উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মোঃজয়নুল আলম তালুকদার বল‌েন,গত বছরের চাইতে এবছর হেক্টরপ্রতি ফলন বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাজার দর ও ফলনও ভালো হয়েছে। তাই চাষীরা অন্য বছরের তুলনায় এ বছর বেশি লাভবান হবেন। চাষিরাও এবার আশাবাদী।