স্বীকৃতি পেলেন বহু গুণের অধিকারী ড. হোসনে আরা জলি


editor প্রকাশের সময় : ২৫/০৩/২০২৩, ১১:৪০ অপরাহ্ণ /
স্বীকৃতি পেলেন বহু গুণের অধিকারী ড. হোসনে আরা জলি

রিয়েল তন্ময় বিনোদন প্রতিবেদক।ড. হোসনে আরা জলি অনেক গুণে গুনান্বিত হলেও এক নিভৃতচারী মানুষ।তিনি শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক নন,লেখক, কবি,নাট্যকার,গীতিকারসহ আরো কত পরিচয়ই না তার আছে।লুকিয়ে থাকা অনন্য এক গুণের স্বীকৃতি পেয়ে আলোয় উদ্ভাসিত হলেন।আর তা হলো গান রচনার জন্য ট্রাব মিউজিক এ্যাওয়ার্ডে শ্রেষ্ঠ গীতিকারের পুরষ্কার পেলেন তিনি।এর আগে গত বছর ২৩ ডিসেম্বর শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে বাংলাদেশ কালচারাল রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন বিসিআরএ এ্যাওয়ার্ড প্রদান করে।এটাই ছিল তার গীতিকার হিসেবে প্রথম পুরষ্কার পাওয়া।কিভাবে এই গুন পেলেন তিনি? হোসনে আরা জলি বলেন,স্কুল-কলেজে পড়ার সময় সেই ৮২/৮৩ সাল থেকেই লুকিয়ে লুকিয়ে ডায়রিতে গান লিখতাম।কখনও কাউকে দেখাতাম না।কলেজ পাশ করার পর যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম এবং শাকুর মজিদের সাথে পরিচয় হলো তখন তাকে মাঝে মাঝে চিঠির ভেতর গান পাঠাতাম আর শাকুর মজিদ আমাকে তার লেখা কবিতা পাঠাতো।আমি যে গান লিখি সেটা শাকুর ছাড়া আর কেউ জানতো না।১৯৯৩ সালে আমাদের বিয়ের পর সম্ভবত ১৯৯৯ সালে শাকুর পার্থ বড়ুয়াকে আমার লেখা গান দেখালে পার্থদা একটা গান নিয়ে সুর করে আমাকে একদিন টেলিফোনে শোনালেন ‘আমি নদীকে বলেছি ও নদী।সেদিনের সেই অনুভূতি আজও অনুভব করি।গানটি সাউন্ডটেক থেকে বিখ্যাত শিল্পীদের গাওয়া মিক্সড ক্যাসেট(তখন ক্যাসেটই ছিলো) অপরিচিতা’য় প্রকাশ হয়েছিলো।এরপর ২০০০ সালে শাকুর মজিদের লেখা,তৌকির আহমেদ পরিচালিত টেলিফিল্ম,নাইওরি’জন্য শাকুর মজিদের অনুরোধে লিখি থিম সং।যার সুর ও সংগীত করেছিলেন বাংলাদেশের খ্যাতিমান সংগীত পরিচালক সুজেয় শ্যাম এবং কণ্ঠ দিয়েছিলেন জনপ্রিয় শিল্পী সেলিম চৌধুরী।এরপর ২০০৪ সালে সাউন্ডটেক থেকে খ্যাতিমান গীতিকার মনিরুজ্জামান মনির এবং আমার লেখা গানের একটি ক্যাসেট বের হয়। শিল্পী ছিলেন পলাশ ও সুতপা সিনহা এবং সংগীত পরিচালক আহমেদ কিসলু।তারপর পেশাগত লেখালেখি, পিএইচ.ডি ইত্যাদি গবেষণার কাজের কারণে দীর্ঘ বিরতি। তবে ভেতরে গানের ভাবনাটা এলে ডায়রিতে লিখতে ভুলিনি।২০১৫/১৬ তে আবার একটু একটু করে শুরু করলাম।বিশেষ করে বলতেই হবে সেরাকণ্ঠের সেরা(২০১৭) রাকিবা ঐশী আবার গানে নিয়ে এলো এবং প্রয়াত বাসুদেব ঘোষ দাদার অবদানও অনেক।বাসুদার সুরে ঐশী এবং কলকাতার রাঘব চ্যাটার্জি,সুদেষ্ণা গাঙ্গুলির কণ্ঠে আমার বেশ কিছু গান হওয়ায় আমার উৎসাহটা বেড়ে যায়।জলি বলেন, আগের প্রজন্ম এবং নতুন প্রজন্মের অনেক শিল্পীই আমার অনেক গান গেয়েছেন। সুজেয় শ্যাম,শেখ সাদী খান, তিমির নন্দী,ফাহমিদা নবী, পার্থ বড়ুয়া,বিনোদ রায়,উজ্জ্বল সিনহা,মুনতাসির তুষারসহ আরও অনেক খ্যাতিমান সুরকার ও সংগীত পরিচালকের হাতে আমার গান নতুন করে প্রাণ পাচ্ছে।বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আমি গতবছর জন্মদিনে‘বঙ্গবন্ধু’শিরোনামে একটি গান লিখেছি এবং গানটির জন্য বাংলাদেশ কালচারাল রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন থেকে শ্রেষ্ঠ গীতিকারের পুরস্কার পেয়েছি। এবছরও বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে আমি এ প্রজন্মের জন্য বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আমি যুদ্ধ দেখিনি’শিরোনামে আরেকটি গান লিখেছি।ড. জলি আরও বলেন,মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে গত বছর আমি,বঙ্গকন্যা’শিরানামে একটি গান লিখেছি এবং এই গানটির জন্য বাংলাদেশ টেলিভিশন রিপোর্টার্স ইউনিটি অব বাংলাদেশ আমাকে ট্রাব মিউজিক অ্যাওয়ার্ড-২০২২ এ শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে পুরস্কৃত করেছে।পুরস্কার পাওয়ার অনুভূতি শুধু অনুভব করতে হবে,এটি বলা যায় না এমনই এক অসাধারণ অনুভূতি!শেখ রাসেলকে নিয়েও আমি গতবছর রাসেলের জন্মদিনে একটি গান লিখেছি যেটি মোহিন খান ও রাকিবা ঐশী গেয়েছে বাংলদেশ বেতারে রাসেলের জন্মদিনে।তিনি বলেন,আমি বাংলাদেশ বেতারের একজন তালিকাভুক্ত গীতিকার।দেশের গান লিখতেই বেশি ভালোবাসি,তবে যেধরনের গানই লিখি আমি গানে গানে গল্প বলতে চাই, একটা বার্তা দিতে চাই। গানের কথা আর সুরের মাঝে বেঁচে থাকতে চাই।নাট্যকার হোসনে আরা জলি সম্পর্কে জানতে চাইলে, তিনি বলেন,নাটক লেখার প্রকাশটাও হুট করে।২০০৩ সালে চয়নিকা চৌধুরীর পরিচালনায় বিটিভিতে প্রচারিত হয় কলমিলতা।তাতে অভিনয় করেছিলেন আজিজুল হাকিম,বিজরী,শাহেদও সুইটি।এরপর ২০০৭ সালে এনটিভিতে প্রচারিত হয় মায়াজাল।অরুণ চৌধুরীর পরিচালনায় নাটকে অভিনয় করেন সুবর্ণা মোস্তফা, আজাদ আবুল কালাম প্রমুখ।সর্বশেষ ২০১৩ সালে একুশে টিভিতে চয়নিকা চৌধুরীর পরিচালনায় প্রচারিত হয় অপূর্ব-রিচি,ডলি জহুর অভিনীত‘জায়গাসুদ্ধ বাড়ি।তিন জেনারেশনকে নিয়ে,প্রিয় প্রজন্ম’নামে ২৬ পর্বের একটি ধারাবাহিক নাটক আমাকে লিখতে বলা হয়েছিলো,আমি লিখেছি,করার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা আর করা হয়নি।কবে হবে তা আর বলতে পারছি না।