তিতাসে নদী খননের নামে বালু বিক্রি,হুমকির মুখে তীরবর্তী ফসলী জমি,বিক্ষুব্ধ জনতা


editor প্রকাশের সময় : ১৮/০২/২০২৩, ৯:৩১ পূর্বাহ্ণ /
তিতাসে নদী খননের নামে বালু বিক্রি,হুমকির মুখে তীরবর্তী ফসলী জমি,বিক্ষুব্ধ জনতা

মোঃ জুয়েল রানা, স্টাফ রিপোর্টার।

কুমিল্লার তিতাস উপজেলা দিয়ে বয়ে যাওয়া তিতাস নদী খননের নামে লক্ষ লক্ষ টাকার বালু বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিযুক্ত লোকজন নদীর বালু লোপাটের উৎসবে মেতে উঠেছেন।নদী অতিরিক্ত গভীর করে বালু উত্তোলনের কারনে নদীর দুই পাড় ভাঙন দেখা দিলে শুক্রবার সকালে উপজেলার মজিদপুর, বন্দরামপুর ও একলারামপুর গ্রামের সংক্ষুব্ধ হাজারো জনতা একত্রিত হয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ড্রেজার মেশিন, লোহার পাইপ ও ড্রামে ইটপাটকেল ছুঁড়ে মারে। এসময় ড্রেজার শ্রমিকরা সংক্ষুব্ধ জনতার রোষানলে পরে ড্রেজারের পাইপ খুলে ফলেন।সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, নদীর বালু-মাটি দিয়ে দুইপাশের সুরক্ষা বাঁধসহ পানির লেভেল গভীর করার বিধান থাকলেও তা না মেনে প্রায় ১৮ থেকে ২২ ফুট গভীর করে চুক্তিভিত্তিক টাকার বিনিময়ে জমি ভরাট করছেন এবং অপরিকল্পতি ভাবে বালু-মাটি উত্তোলনের ফলে নদীর তীরবর্তী ফসলি জমির ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। তাছারা পাশ্ববর্তী কড়িকান্দি-মজিদপুর রাস্তাও ভাঙনের কবলে পড়তে পারে বলেও এলাকাবাসী অভিযোগ করেন।নির্দেশনা অনুযায়ী নদী খননের মাটি ও বালু দিয়ে দুই পাড়ে শক্ত ও সুরক্ষা বাঁধ ও পানির লেভেল থেকে কোথাও ৮ কোথাও ১০ ফুট গভীর করার নির্দেশনা রয়েছে। এবং উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মকর্তা কিংবা সার্ভেয়ারদের নির্ধারিত সীমানা বা সিডিউল অনুযায়ী নদী খনন করার কথা থাকলেও এমন নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে নদীর এক স্থানে ড্রেজার বসিয়ে নদী থেকে বালু-মাটি বিক্রি করছেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানসহ একটি সিন্ডিকেট।জমির মালিক নিজাম, নাছির উদ্দিন, বাচ্ছু মিয়া, জাহাঙ্গীর মুন্সীসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, নদীর পানির লেভেল থেকে ১০ ফুটের যায়গায় প্রায় ১৮ থেকে ২২ ফুট গভীর করে খননের ফলে আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি নদীগর্ভে বিলিন হবার পথে। অথচ আমাদের স্বার্থ জলাঞ্জলী দিয়ে নদী খননের নামে কোটি টাকার মাটি ও বালু বাণিজ্যের কাজ শুরু করেছে জেলা যুবলীগের সাবেক সদস্য নজরুল ইসলামসহ কিছু লোকজন। টাকার বিনিময়ে বালু উত্তোলন করে রাস্তার পাশে একলারামপুর গ্রামের শাহাজুদ্দিনের জমি ভরট করে পাহাড়সম করছেন নজরুল। আমরা নিষেধ করলে তারা সরকারি কাজের দোহাই দিচ্ছে।তিতাস নদী সংলগ্ন একলারামপুর এলাকায় ড্রেজার চালককে পাওয়া গেলেও তারা বিস্তারিত কিছুই জানাতে পারেনি। তারা বলেন আমরা হুকুমের গোলাম মাত্র। যা হুকুম করবে আমরা তাই করতে বাধ্য।এবিষয়ে জেলা যুবলীগের সাবেক সদস্য নজরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখানে সাইড দেখাশোনা করি, মুল দায়িত্বে আছে ফারুক।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম মোর্শেদ বলেন, এ বিষ‌য়ে আ‌মি বিস্তা‌রিত পা‌নি উন্নয়ন বো‌র্ডের সা‌থে কথা ব‌লে সমস্যার সমাধান করার ব্যবস্থা গ্রহন কর‌বো।পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালী উল্লাহ বলেন, নদীপথ সচল করতে ২০২০ অর্থবছরে তিতাস উপজেলার প্রায় ৪৫ কিলোমিটার তিতাস নদীসহ, খাল খনন ও ব্রিজের গোড়ায় ব্লক বিছানোর জন্য অনুমোদন দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। এ জন্য বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে প্রায় ৭৬ কোটি টাকা। গতবছর তিতাস নদী খননের কাজ সম্পূর্ণ শেষ না হওয়ায় এবার বাকী অংশের খননের কাজ পেয়েছে রহমান ইঞ্জিনিয়ারিং ও নিয়াজ ট্রেডার্স ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ কাজটির দায় দায়িত্ব তিতাস উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার। তবে বেশী গভীর করে নদী খনন করার কোন সুযোগ নাই।