প্রমাণ পেলে রিয়াজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: ওবায়াদুল কাদের


editor প্রকাশের সময় : ২৬/০৪/২০২৪, ৭:২৯ অপরাহ্ণ /
প্রমাণ পেলে রিয়াজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: ওবায়াদুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপিকে ছাড়াই দেশের গণতন্ত্র, জাতীয় নির্বাচন ও উপজেলা নির্বাচন ভালোভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে নির্বাচন বানচালসহ নানা ষড়যন্ত্র ছিল। এতো কিছু অতিক্রম করে ভালোভাবে চলছি। বিএনপি মনে করেছিল, বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলে সরকার বৈধতা পাবে না। কিন্তু হয়েছে উল্টো। জাতীয় নির্বাচনের পর স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে ২৩১টি নির্বাচন হয়েছে। যেখানে ভোট পড়েছে ৬০ শতাংশ।

বিএনপি দিনের আলোয় অন্ধকার দেখে। তাদের এতো হীন মনোবৃত্তি। আজকে তারা কথায় কথায় ড্যামি নির্বাচন বলে। তারা নিজেরাই আজকে ড্যামি রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। গত জাতীয় নির্বাচন বিরোধীরা কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখার পরেও জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছেন। বিভিন্ন রাষ্ট্র প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন ও কাজ করার কথা বলেছেন।

দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী ও অনৈতিক কাণ্ডের জন্য ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সদস্য সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলীকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তার অব্যাহতি রফাদফা করতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজের ১০ লাখ টাকা চাওয়ার প্রসঙ্গে এই বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেবেন জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়াদুল কাদের বলেছেন, প্রমাণ পেলে দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ‌‘মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ১০ লাখ টাকা চেয়েছেন, এইটার সত্যতা কী?’ এসময় সাংবাদিকরা বলেন, ‘ফোন রেকর্ড আছে।’

এর জবাবে তিনি বলেন, ‘তাহলে দিন, আমরা ব্যবস্থা নেবো।’ শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাজধানীর ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, সারা বিশ্ব যুদ্ধ-সংঘাতে ভয়ংকর পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েছে। আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, রাশিয়া-ইউক্রেন ও ইসরায়েল-ফিলিস্তিন-হামাস পৃথিবীকে উত্তপ্ত করে রেখেছে। বিশ্ব জনমতকে উপেক্ষা করে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু রাফায় আগ্রাসী অভিযান শুরু করেছেন। এই পরিস্থিতিতে আমাদের নেত্রী যুদ্ধের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে চলেছেন। সকল প্রকার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো ও এ যুদ্ধকে না বলার জন্য বিশ্বের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের যে উন্নতি ও উচ্চতা, এটা দেখে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ লজ্জিত হন। তখন পূর্ব পাকিস্তানকে তাদের কাছে মনে হতো বোঝা। এখন সে বোঝাই অনেক উন্নয়নে এগিয়ে গেছে। সে উন্নয়ন দেখে তিনি লজ্জিত হন। বিএনপি যতটা অপপ্রচার করে, তাদের শাহবাজ শরিফের বক্তব্য থেকে প্রকৃত সত্য শিক্ষা নেওয়ার অনেক কিছু আছে।

উপজেলা নির্বাচনে এমপি মন্ত্রীদের স্বজনদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখনো সময় আছে । যে কোনো সময় প্রত্যাহার করা যাবে। শেষ দিন পর্যন্ত দেখতে হবে। দলীয় নির্দেশ অমান্য করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা সময়মতো নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি যারা অংশগ্রহণ করেছে তাদেরকে দল বহিষ্কার করা হয়েছে প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা সমর্থনও করছি না। বিরোধিতাও করছি না। বিএনপির কাজ তাদের করতে দেন।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, উপজেলা নির্বাচনে সংঘাত আশংকা করতেই পারি। তবে সংঘাত যেন না হয় আমাদের প্রয়াস অব্যাহত আছে।

বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের সমালোচনা করেন ওবায়দুল কাদের বলেন, গাজায় ইসরাইল যে গণহত্যা চালাচ্ছে তা মানবাধিকারের কোন পর্যায়ে গেছে? প্রতিদিন সেখানে মানুষ মারছে। কারও কথারই তোয়াক্কা করছে না।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবও মানছে না। সেই যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের ফান্ডে ইসরায়েলের অংশের অনুমোদন ইতোমধ্যে দিয়েছে। তার মানে যুদ্ধের উসকানিতে সহযোগিতা করছে। আগে তারা ইসরায়েলের যে গণহত্যা, এ গণহত্যার ব্যাপারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে নিকৃষ্টতম নমুনা এর ব্যাপারে তারা তাদের অবস্থান পরিষ্কার করুক। তারপর অন্যদের হেদায়েত করুক।

এতে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী প্রমুখ।