স্টাফ রিপোর্টার: সিলেট সীমান্তে থেমে নেই চোরাচালান বানিজ্য,
প্রতিদিনই আটক হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকার ভারতীয় পণ্য। সিলেটের
গোয়াইনঘাট জৈন্তাপুর কোম্পানীগঞ্জ কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ সীমান্ত
দিয়ে প্রতি রাতেই দেশে প্রবেশ করছে কোটি কোটি টাকার ভারতীয়
পণ্য চিনি, কসমেটিক্স মাদকসহ নানান চোরাই পণ্য। আর সেই
চোরাচালানী পণ্য বহনকারী ট্রাক আটক করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ
টাকা স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট চক্র।
স্থানীয় একাধিক সুত্র জানায়,সীমান্ত থেকে ট্রাকে আসা ভারতীয় চিনি, গরু মহিষ, কসমেটিক্স ও
মাদক। প্রতিদিন সন্ধা ৭টা থেকে ভোর পর্যন্ত সিলেট তামাবিল সড়কের বটেশ্বর হলগেইট এলাকায় ট্রাক আটক করে প্রতি ট্রাক থেকে ১০-১৫ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছেন স্থানীয় হলগেইট এলাকার বাসিন্দা ও কুখ্যাত ডাকাত হাতকাটা হানিফ এর নেতৃত্বে। তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজি হয় না।
সিলেট সীমান্তের গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট থেকে প্রচুর পরিমানে ভারতীয় গরু মহিষ।মাদক চিনিসহ বিভিন্ন শাড়ী কাগড় থান কাপড় ও লেহেঙ্গা জাতীয় কাপড়। গোয়াইনঘাট এলাকার চিহ্নিত চাদাবাজ ভুয়া সাংবাদিক হুমায়ুন র্যাবের হাতে আটকের পর হুমায়ুনের চাঁদাবাজীর সক্রিয় সদস্যরা ভয় পেয়ে যায় এবং তারা হুমায়ুনের অপরাধ ঢাকতে নিরীহ ও প্রতিবাদী গণমাধ্যমকমর্ীদের জড়িয়ে বিভিন্ন পোর্টালে ও পত্রিকায় সংবাদ পরিবেশন করে তাদের নিজেদের আড়াল করার চেষ্টা করছে।
অথচ সেই হুমায়ুনকে দিয়ে সিলেট ঢাকার বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদকে মিথ্যা মামলায় আসামী করেছিলেন সেই সিন্ডিকেট চক্রটি। সেই চক্রটি যখন যে দল ক্ষমতায় আসে সেই দলের পক্ষাবলম্বন করে। হুমায়ুন সীমান্ত থেকে মোবাইল ফোনে খবর দিতো হাতকাটা হানিফকে কখন কোন ট্রাকে করে কোন ধরনের অবৈধ পণ্য নিয়ে আসা হচ্ছে সেইগুলো ট্রাক আটক করেই তারা মোটা অংকের অর্থ হাসিল করত। র্যাবের হাতে হুমায়ুন
আটক হওয়ায় সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যরা একটু ঝিমিয়ে পড়ছে।
সিলেট নগরীর চিহ্নিত ছিনতাইকারী, ধর্ষণকারী মামলাবাজ ও প্রতারক
চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে ডেভিল হান্ট পরিচালনার দাবী সুশীল সমাজের
প্রতিনিধিদের। জানা যায়, গেল ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় ও ৫ আগষ্ট
পরবতর্ী সময়ে সিলেট তামাবিল সড়কে ভারতীয় চিনি ও চোরাচালান
বোঝাই ট্রাক আটকে চাঁদাবাজী করে আসছে একটি সিন্ডিকেট
চক্রের সদস্যরা। সিলেট বটেশ্বর এলাকার এক সময়ের কুখ্যাত ডাকাত
সরদার, একাধিক ডাকাতি মামলার আসামী মোহাম্মদ হানিফ ওরফে হাত
কাটা হানিফ এর নেতৃত্বে ছিনতাইকারী ফয়সল আহমদ ওরফে ঠোকাই
ফয়সল, চেচরা রাজন ওরফে ফেঞ্চি রাজন, দক্ষিন সুরমার ছিনতাইকারী ও
ধর্ষণমামলার আসামী নুর উদ্দিন রাসেল এবং গোলাপগঞ্জের প্রতারক
রুমনসহ ১৫/২০ জনের একটি সংঘবদ্ধচক্র ট্রাক আটক করে মোটা
অংকের চাঁদা আদায় করে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে কেহ মুখ খোলার
সাহস পায় না। ফ্যাসিস্ট সরকার বদল হলেও ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজরাও
তাদের দল বদল করে বিএনপি জামায়াতের তখমা লাগিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন
তাদের অবৈধ ব্যবসা। এই ব্যবসার বিরুদ্ধে কোন সাংবাদিক সংবাদ
পরিবেশন করলে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হামলার মাধ্যমে হয়রাণী করে
আসছে। তাদের রয়েছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট চক্র। গোলাপগঞ্জের
বাঘা কালাকোনা গ্রামের মনাই মাঝির পোয়া ছিনতাইকারী ফয়সল
আহমদ সেটেলমেন্ট জরিপের মাধ্যমে জায়গা জমির কাগজপত্র ঠিক করে
দেয়ার নাম করে হাতিয়ে নিয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা এবং বিভিন্ন নিরীহ
মানুষকে মিথ্যা মামলায় আসামী করার কারণে এলাকা থেকে বিতাড়িত
এবং তার পিতা তাকে ত্যাজ্য পুত্র করেছে। তার শ্বশুড়বাড়ীতে থেকে
ছিনতাই চাদাবাজী ও মিথ্যা মামলায় নিরীহ মানুষকে ফাঁসিয়ে লাখ
লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়াই তার কাজ। তার বিরুদ্ধে গোলাপগঞ্জ থানা,
কোতোওয়ালী ও শাহপরান থানায় একাধিক ধর্ষণ মামলা,সিএনজি চুরি
ও ছিনতাই, প্রতারনার একাধিক মামলার পলাতক আসামী। সে পুলিশের
ভয়ে হানিফের কাছে আশ্রয় নিয়েছে। রাজন মিয়ার গ্রামের বাড়ী
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে। লেখাপড়া বেশী না থাকলেও নিজেকে সাংবাদিক
মানবাধিকারকমর্ী হিসাবে পরিচয় দিয়ে থাকেন। ৫ আগষ্টের আগে
আওয়ামীলীগের রাজনীতি করলেও ৫ আগষ্টের পর নিজেকে বৈষম্যবিরোধী
ছাত্র আন্দোলনে আহত হওয়ায় গল্প শুনায় এবং বলে বেড়ায় অথচ ইসলামপুর
এলাকায় সিএনজি ছিনতাইয়ের সময় স্থানীয়রা তাকে আটক করে
গণপিঠুনিতে আহত হওয়াকে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের আহত হওয়ার
ঘটনাকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে। হানিফের নেতৃত্বে ফয়সল নুর
উদ্দিন রাসেল, রুমন গংরা অপরাধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের কাছ
থেকে সাধারন মানুষ মুক্তি চায়। এই চক্রটি এতই শক্তিশালী যে, পুলিশ
র্যাব ও সেনাবাহিনীর কিছু অসৎ সদস্যকে হাত করে তাদের আকাম
কুকাম চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতি রাতেই চোরাচালানীদের চিনি কিংবা
কসমেটিক্সের ট্রাক আটক করে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে
এবং স্থানীয় পুলিশ র্যাব ও সেনাবাহিনীর অসৎ সদস্যদের মাঝে ভাগ করে
দিচ্ছেন। কোন ট্রাক চালক তাদেরকে চাহিদা মোতাবেক টাকা দিতে
না পারলে পুলিশে সোর্পদ করে এবং মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠিয়ে
দেয়। এই ভয়ে সবাই তাদেরকে টাকা দিয়ে ভারতীয় চোরাচালাণী পন্য
দেশের বিভিন্ন স্থানে পবিরবহন করে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে মোহাম্মদ হানিফ জানান, আমি কোন ধরনের চাঁদাবাজীর
সাথে জড়িত নই। আমার নাম ভাঙ্গিয়ে অনেকেই চাঁদাবাজী করে যাচ্ছে
বলে শুনতেছি। তাই যারাই এ ধরনের কাজের সাথে জড়িত থাকবে তাদেরকে
আইনের আওতায় নিয়ে আসার অনুরোধ করছি।
শাহপরান থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মনির হোসেন জানান, সিলেট
তামাবিল সড়কের মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি এলাকায় একদল
সন্ত্রাসী ট্রাক আটক করে চাঁদা আদায় করছে বলে শুনেছি কিন্তু
পুলিশির উপস্থিতি টের পেয়েই তারা সটকে পড়ে। এদেরকে আইনের
আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে।