ঢাকা ০৫:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিদ্ধিরগঞ্জে সরকারি জমিদখল নিয়ে দিনব্যপী ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া

  • প্রতিবেদক এর নাম
  • প্রকাশের সময় : ০৯:০৫:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
  • ১৪০ বার পড়া হয়েছে
উপজেলা করেসপন্ডেন্টনারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে রেলওয়ের সরকারি জমি দখলকে কেন্দ্র করে নীট কনসার্ন গ্রুপ অব ইন্ডস্ট্রিজ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার(১৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে পাঠানটুলী এলাকায় ছাত্রজনতার ব্যানারে নীট কনসার্ন প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগে মানববন্ধন ও টিনের বেড়া ভেঙে ফেলায় ঘটনার সূত্রপাত হয়। এনিয়ে দিনব্যপী চলে উত্তেজনা। বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে দুপক্ষ মুখমোখী অবস্থান নিলে সেনাবাহনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করেন। এসময় নারায়ণগঞ্জ জেলা সহকারী পুলিশ সুপার হাসিনুজ্জামান ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলমের সঙ্গে বাক বিত-া ও অসদাচরণ করে প্রশাসনের কালোহাত ভেঙে দাও স্লোগান দেয় ছাত্রজনতা পরিচয়দানকারীরা।
জানা গেছে, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের ঘটনায় করা হত্যা মামলার আসামি পাঠানটুলী এলাকার সাব্বির ভূঁইয়া নীট কনসার্ন গ্রুপের ভেতরে ৪ শতাংশ জমির মালিক দাবি করে আসছেন। তিনি এ জমি দখলমুক্ত করতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা দাবি করা আনিককে পাওয়ার নাম দলিল করে দেন।
শনিবার সকালে অনিক ১৫-১৫ জন লোক নিয়ে ছাত্রজনতার ব্যানারে জমিদখলকারী অখ্যা দিয়ে নীট কনসার্ন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে। পরে তারা শিল্পপ্রতিষ্ঠানটির দেওয়া টিনের বেড়া ভাঙচুর করে। তখন প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা তাদের ধাওয়া দেয়। এতে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে অর্ধশতাধিক লোকজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র পরিচয় দিয়ে নীট কনসার্ন গ্রুপের সামনে জড়ো হয়। তখন নীট কনসার্ন গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ২৬ হাজার শ্রমিকের একাংশ বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বের হয়ে ভেঙে ফেলা টিনের বেড়াটি আবার লাগিয়ে ফেলে।
এসময় ছাত্রনতা পরিচয় দেওয়া লোকজন শ্রমিকদের প্রতিহত করার জন্য পুলিশের দ্বারস্থ হয়। পুলিশ তাদের কথামত কাজ না করায় জেলা সহকারী পুলিশ সুপার হাসিনুজ্জামান ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলমের সঙ্গে অসদাচরণ শুরু করেন। একপর্যায় তারা প্রশাসনের কালো হাত ভেঙে দাও, আবু সাঈদ মুক্ত শেষ হয়নি যুদ্ধ ও রক্তে আগুন লেগেছে এমন স্লোগান দেয়। বিপুল সংখ্যক সেনাবাহনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার পর বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে দুপক্ষ সরে যায়। এতে পরিস্থিত শান্ত হয়।
চানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী নেতা পরিচয় দেওয়া অনিক বলেন, আমি সাব্বির ভূঁইয়ার কাছ থেকে এ জমি পাওয়ার নামা দলিল করে নিয়েছি। জমির দখল ছেড়ে দিতে বলায় নীট কনসার্ন কর্তৃপক্ষের লোকজন আমাদের উপর হামলা করে।
অনিকের অভিযোগ অস্বীকার করে নীট কনসার্স গ্রুপের ডিরেক্টর মো. জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা বলেন, মূলত এটা  রেলওয়ের সরকারি জমি। এ জমি আমরা সরকারের কাছ থেকে লিজ নিয়েছি। বছরে সরকারকে ৩৭ লাখ  ১৩ হাজার ৮০৮ টাকা কর দেই। ছাত্রজনতার ব্যানারে কিছু লোক এসে জমি দখল করে নিতে আমাদের দেওয়া বেড়া ভেঙ্গে ফেলে। আমাদের এখানে প্রায় ২৬ হাজার শ্রমিক রয়েছে। যদি আমরা হামলা করতাম তাদের অস্তিত্ব থাকতো না।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহিনূর আলম বলেন, সরকারি জমি নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। দুপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে। অসদাচণের বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করেন নি।
আসদাচণের বিষয়ে জেলা সহকারী পুলিশ সুপার হাসিনুজ্জামান বলেন, আমরা দুপক্ষকে শান্ত করেছি। বিষয়টি দেখার দায়ীত্ব নিয়েছেন সেনাবাহিনী। অসদাচরণ ও বাকবিত-া বিষয়ে তিনি মন্তব্য করেন নি।
খবর টি শেয়ার করুন :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Munna Khan

সর্বাধিক পঠিত

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে এমপি প্রার্থী সিরাজুল মামুনের পক্ষে মিশনপাড়ায় গণসংযোগ

সিদ্ধিরগঞ্জে সরকারি জমিদখল নিয়ে দিনব্যপী ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া

প্রকাশের সময় : ০৯:০৫:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
উপজেলা করেসপন্ডেন্টনারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে রেলওয়ের সরকারি জমি দখলকে কেন্দ্র করে নীট কনসার্ন গ্রুপ অব ইন্ডস্ট্রিজ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার(১৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে পাঠানটুলী এলাকায় ছাত্রজনতার ব্যানারে নীট কনসার্ন প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগে মানববন্ধন ও টিনের বেড়া ভেঙে ফেলায় ঘটনার সূত্রপাত হয়। এনিয়ে দিনব্যপী চলে উত্তেজনা। বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে দুপক্ষ মুখমোখী অবস্থান নিলে সেনাবাহনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করেন। এসময় নারায়ণগঞ্জ জেলা সহকারী পুলিশ সুপার হাসিনুজ্জামান ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলমের সঙ্গে বাক বিত-া ও অসদাচরণ করে প্রশাসনের কালোহাত ভেঙে দাও স্লোগান দেয় ছাত্রজনতা পরিচয়দানকারীরা।
জানা গেছে, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের ঘটনায় করা হত্যা মামলার আসামি পাঠানটুলী এলাকার সাব্বির ভূঁইয়া নীট কনসার্ন গ্রুপের ভেতরে ৪ শতাংশ জমির মালিক দাবি করে আসছেন। তিনি এ জমি দখলমুক্ত করতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা দাবি করা আনিককে পাওয়ার নাম দলিল করে দেন।
শনিবার সকালে অনিক ১৫-১৫ জন লোক নিয়ে ছাত্রজনতার ব্যানারে জমিদখলকারী অখ্যা দিয়ে নীট কনসার্ন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে। পরে তারা শিল্পপ্রতিষ্ঠানটির দেওয়া টিনের বেড়া ভাঙচুর করে। তখন প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা তাদের ধাওয়া দেয়। এতে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে অর্ধশতাধিক লোকজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র পরিচয় দিয়ে নীট কনসার্ন গ্রুপের সামনে জড়ো হয়। তখন নীট কনসার্ন গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ২৬ হাজার শ্রমিকের একাংশ বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বের হয়ে ভেঙে ফেলা টিনের বেড়াটি আবার লাগিয়ে ফেলে।
এসময় ছাত্রনতা পরিচয় দেওয়া লোকজন শ্রমিকদের প্রতিহত করার জন্য পুলিশের দ্বারস্থ হয়। পুলিশ তাদের কথামত কাজ না করায় জেলা সহকারী পুলিশ সুপার হাসিনুজ্জামান ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলমের সঙ্গে অসদাচরণ শুরু করেন। একপর্যায় তারা প্রশাসনের কালো হাত ভেঙে দাও, আবু সাঈদ মুক্ত শেষ হয়নি যুদ্ধ ও রক্তে আগুন লেগেছে এমন স্লোগান দেয়। বিপুল সংখ্যক সেনাবাহনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার পর বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে দুপক্ষ সরে যায়। এতে পরিস্থিত শান্ত হয়।
চানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী নেতা পরিচয় দেওয়া অনিক বলেন, আমি সাব্বির ভূঁইয়ার কাছ থেকে এ জমি পাওয়ার নামা দলিল করে নিয়েছি। জমির দখল ছেড়ে দিতে বলায় নীট কনসার্ন কর্তৃপক্ষের লোকজন আমাদের উপর হামলা করে।
অনিকের অভিযোগ অস্বীকার করে নীট কনসার্স গ্রুপের ডিরেক্টর মো. জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা বলেন, মূলত এটা  রেলওয়ের সরকারি জমি। এ জমি আমরা সরকারের কাছ থেকে লিজ নিয়েছি। বছরে সরকারকে ৩৭ লাখ  ১৩ হাজার ৮০৮ টাকা কর দেই। ছাত্রজনতার ব্যানারে কিছু লোক এসে জমি দখল করে নিতে আমাদের দেওয়া বেড়া ভেঙ্গে ফেলে। আমাদের এখানে প্রায় ২৬ হাজার শ্রমিক রয়েছে। যদি আমরা হামলা করতাম তাদের অস্তিত্ব থাকতো না।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহিনূর আলম বলেন, সরকারি জমি নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। দুপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে। অসদাচণের বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করেন নি।
আসদাচণের বিষয়ে জেলা সহকারী পুলিশ সুপার হাসিনুজ্জামান বলেন, আমরা দুপক্ষকে শান্ত করেছি। বিষয়টি দেখার দায়ীত্ব নিয়েছেন সেনাবাহিনী। অসদাচরণ ও বাকবিত-া বিষয়ে তিনি মন্তব্য করেন নি।