ঢাকা ০৬:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিদ্ধিরগঞ্জে কিশোরগ্যাংয়ের হামলায় হোসিয়ারী শ্রমিক ফারুক হত্যা, গ্রেফতার-৫

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে কিশোরগ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হোসিয়ারী শ্রমিক ফারুক নিহতের ঘটনায় ৫ কিশোরগ্যাং সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১১’র সদস্যরা। মঙ্গলবার (২৭ মে) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী নগরে অবস্থিত র‌্যাব-১১’র সদর দপ্তর থেকে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃতরা হলো, সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল সৈয়দপাড়া এলাকার মৃত মকবুলের ছেলে রবিউল আউয়াল (১৬), শাহ আলমের ছেলে মুহাম্মদ রিফাত (১৬), গোদনাইল চৌধুরীবাড়ী এলাকার আল আমিনের ছেলে মো: তামীম (১৬), একই এলাকার মৃত সাধুল্লার ছেলে সাদ্দাম (২১), চৌধুরীবাড়ী বৌবাজার এলাকার মাসুদ রানার ছেলে শান্ত (১৭)।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব জানায়, ভিকটিম ফারুক স্থানীয় একটি হোসিয়ারী ফ্যাক্টরিতে চাকরী করতেন। পূর্বে গ্রেফতারকৃত আসামী আনাসের সাথে ফারুকের এলাকার ছোট ভাই-বড় ভাই নিয়ে কথা কাটা-কাটি হয় এবং তাকে প্রায় সময়ই আনাস ও তার সহযোগীরা বিভিন্ন প্রকার হুমকী-ধমকী প্রদান করে। গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর শুক্রবার দিবাগত রাত ৮ দিকে গ্রেফতারকৃত আসামি আনাস সহ আরো ৭/৮ জন সন্ত্রাসী প্রকৃতির কিশোর দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ধারালো চাপাতি, ছুরি, লাঠি-সোটা নিয়ে রাস্তায় ওত পেতে থাকে। ফারুক তার কর্মস্থল হতে নিজ বাসায় ফেরার পথে ঘটনাস্থলে পৌছামাত্রই আসামীগণ ফারুকের গতিরোধ করে ও ধাক্কা দেয় এবং ফারুককে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এসময় আসামীদের কোপের আঘাতে ফারুক মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে ফারুক জীবন বাঁচানোর জন্য ডাক চিৎকার করলে আশে-পাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এগিয়ে আসতে থাকলে আসামীগণ দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। উক্ত ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে। অতঃপর স্থানীয় লোকজন ফারুককে মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে স্থানীয় খানপুর ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় ২৮ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। টাকার অভাবে সামান্য চিকিৎসা নিয়ে ৩০ ডিসেম্বর ফারুক ছাড়পত্র নিয়ে বাড়িতে চলে আসে। এ ঘটনায় ফারুকের পক্ষ থেকে একটি মারামারির মামলা করা হয়। বাড়িতে আসার পর ফারুকের শারীরিক অবস্থা আশংকাজনক হয়ে পড়লে তাকে পুনরায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে ভিকটিম ফারুক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। পরে মামলাটি হত্যা মামলায় রুপান্তরিত হয়। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মামলা নং-০৭, তাং-০৬/০২/২৫ইং।
র‌্যাব জানায়, উক্ত ঘটনায় মামলা রুজূ হওয়ার পর সিসিটিভি ফুটেজ দেখে মামলার আসামিদের গ্রেফতার করার জন্য র‌্যাব-১১ ছায়া তদন্ত আরম্ভ করে। পরবর্তীতে র‌্যাব-১১ ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানার যৌথ টিম গত সোমবার (২৬ মে) দিবাগত রাত ও মঙ্গলবার (২৭ মে) ভোর রাত পর্যন্ত সিদ্ধিরগঞ্জ থানার আরামবাগ, চৌধুরীপাড়া, বউবাজারে অভিযান পরিচালনা করে উক্ত মামলার তদন্তে প্রাপ্ত ও সিসিটিভি ফুটেজ থেকে প্রাপ্ত কিশোর গ্যাংয়ের ৫জন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে এবং অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে র‌্যাব-১১’র অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও নিশ্চিত করা হয়েছে।
খবর টি শেয়ার করুন :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Munna Khan

সর্বাধিক পঠিত

মতলব উত্তরে দুর্বার পাঠশালার উদ্যোগে স্বেচ্ছাসেবী মিলনমেলা ও সম্মাননা স্মারক প্রদান

সিদ্ধিরগঞ্জে কিশোরগ্যাংয়ের হামলায় হোসিয়ারী শ্রমিক ফারুক হত্যা, গ্রেফতার-৫

প্রকাশের সময় : ০৪:৪৭:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে কিশোরগ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হোসিয়ারী শ্রমিক ফারুক নিহতের ঘটনায় ৫ কিশোরগ্যাং সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১১’র সদস্যরা। মঙ্গলবার (২৭ মে) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী নগরে অবস্থিত র‌্যাব-১১’র সদর দপ্তর থেকে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃতরা হলো, সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল সৈয়দপাড়া এলাকার মৃত মকবুলের ছেলে রবিউল আউয়াল (১৬), শাহ আলমের ছেলে মুহাম্মদ রিফাত (১৬), গোদনাইল চৌধুরীবাড়ী এলাকার আল আমিনের ছেলে মো: তামীম (১৬), একই এলাকার মৃত সাধুল্লার ছেলে সাদ্দাম (২১), চৌধুরীবাড়ী বৌবাজার এলাকার মাসুদ রানার ছেলে শান্ত (১৭)।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব জানায়, ভিকটিম ফারুক স্থানীয় একটি হোসিয়ারী ফ্যাক্টরিতে চাকরী করতেন। পূর্বে গ্রেফতারকৃত আসামী আনাসের সাথে ফারুকের এলাকার ছোট ভাই-বড় ভাই নিয়ে কথা কাটা-কাটি হয় এবং তাকে প্রায় সময়ই আনাস ও তার সহযোগীরা বিভিন্ন প্রকার হুমকী-ধমকী প্রদান করে। গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর শুক্রবার দিবাগত রাত ৮ দিকে গ্রেফতারকৃত আসামি আনাস সহ আরো ৭/৮ জন সন্ত্রাসী প্রকৃতির কিশোর দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ধারালো চাপাতি, ছুরি, লাঠি-সোটা নিয়ে রাস্তায় ওত পেতে থাকে। ফারুক তার কর্মস্থল হতে নিজ বাসায় ফেরার পথে ঘটনাস্থলে পৌছামাত্রই আসামীগণ ফারুকের গতিরোধ করে ও ধাক্কা দেয় এবং ফারুককে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এসময় আসামীদের কোপের আঘাতে ফারুক মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে ফারুক জীবন বাঁচানোর জন্য ডাক চিৎকার করলে আশে-পাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এগিয়ে আসতে থাকলে আসামীগণ দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। উক্ত ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে। অতঃপর স্থানীয় লোকজন ফারুককে মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে স্থানীয় খানপুর ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় ২৮ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। টাকার অভাবে সামান্য চিকিৎসা নিয়ে ৩০ ডিসেম্বর ফারুক ছাড়পত্র নিয়ে বাড়িতে চলে আসে। এ ঘটনায় ফারুকের পক্ষ থেকে একটি মারামারির মামলা করা হয়। বাড়িতে আসার পর ফারুকের শারীরিক অবস্থা আশংকাজনক হয়ে পড়লে তাকে পুনরায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে ভিকটিম ফারুক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। পরে মামলাটি হত্যা মামলায় রুপান্তরিত হয়। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মামলা নং-০৭, তাং-০৬/০২/২৫ইং।
র‌্যাব জানায়, উক্ত ঘটনায় মামলা রুজূ হওয়ার পর সিসিটিভি ফুটেজ দেখে মামলার আসামিদের গ্রেফতার করার জন্য র‌্যাব-১১ ছায়া তদন্ত আরম্ভ করে। পরবর্তীতে র‌্যাব-১১ ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানার যৌথ টিম গত সোমবার (২৬ মে) দিবাগত রাত ও মঙ্গলবার (২৭ মে) ভোর রাত পর্যন্ত সিদ্ধিরগঞ্জ থানার আরামবাগ, চৌধুরীপাড়া, বউবাজারে অভিযান পরিচালনা করে উক্ত মামলার তদন্তে প্রাপ্ত ও সিসিটিভি ফুটেজ থেকে প্রাপ্ত কিশোর গ্যাংয়ের ৫জন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে এবং অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে র‌্যাব-১১’র অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও নিশ্চিত করা হয়েছে।