মতলব উত্তর উপজেলার ফরাজীকান্দি ইউনিয়নের ইসলামীয়া বাজারে (নতুন বাজার) চিলেকোঠা রেস্টুরেন্টে দিনের আলোতেই চলছে অসামাজিক কার্যকলাপ।
সরেজমিনে, বাজারটির মামা ভাগিনা প্লাজার দোতালায় অবস্থিত রেস্টুরেন্টটির ভিতরে মুলিবাঁশ ও পর্দা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ছোট ছোট খোপ, যেখানে অবাধে চলেছে অশ্লীল কার্যকলাপ। রেস্টুরেন্টের এক পাশে রয়েছে একটি ‘নিষিদ্ধ প্রবেশ’ লেখা ছোট কক্ষ, যার ব্যবহার নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে।
বাজারের ব্যবসায়ীদের দাবি, রেস্টুরেন্টে এসব কার্যকলাপের প্রতিবাদ করলে রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ উল্টো হুমকি-ধামকি দিয়ে থাকে। নতুন বাজারটি মতলব উত্তরের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র হওয়ায় এখানকার পরিবেশ রক্ষায় তারা প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
স্থানীয় ও ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপের মাধ্যমে ইসলামীয়া বাজারের পরিবেশ রক্ষা ও জনমনে স্বস্তি ফিরবে বলে আশাবাদী সচেতন মহল।
ফরাজীকান্দি ইউনিয়নের এক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, এই ইউনিয়নে অবস্থিত ফরাজীকান্দি উয়েসীয়া কমপ্লেক্স, এখনে বহু বড় বড় আউলিয়া ঘুমিয়ে আছেন। এই পবিত্র স্থানের সন্নিকটে এমন গর্হিত কর্মকাণ্ড আমাদের সহ্য হয় না। আমরা চাই প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নিক।
বাজারের অন্যান্য ব্যবসায়ীরা বলেন, আমরা এখানে পরিবার নিয়ে ব্যবসা করি। চিলেকোঠা রেস্টুরেন্টের কারণে আমাদের সুনাম ও ব্যবসা দুটোই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ক্রেতারা পর্যন্ত অস্বস্তি বোধ করেন। আমরা চাই এই রেস্টুরেন্টে যেসব অনৈতিক কাজ চলছে তা বন্ধ হোক।
সচেতন মহল বলছে, এই ধরনের কর্মকাণ্ড শুধু সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় নয়, তরুণ সমাজকে বিপথে ঠেলে দিচ্ছে। প্রশাসন যেন দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চিলেকোঠা রেস্টুরেন্টের পরিচালক মো. ফিরোজ আহম্মেদ রুবেল বলেন, আমি এর আগে ঢাকা ব্যবসা করতাম। গত কয়েক বছর ধরে মতলব উত্তরের নতুন বাজারের মদিনা রোডে মামা ভাগিনা প্লাজার ২য়তলার উপরে একটা রেস্টুরেন্ট দিয়েছি, এখানে ছেলে মেয়েরা খাবার খাওয়ার জন্য আসে, সেলফি তুলে, গল্প গুজব করে। আমাদের লোকজন তাদেরকে সার্ভিস দেয় প্রত্যেকটা রুম আলাদা আলাদা রুমে তারা কি করে আমরা জানি না।
বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফখরুল সরকার বলেন, বাজারের পরিবেশ ও সুনাম রক্ষার্থে এই বাজারে কেন রকম অসামাজিক কার্যকলাপ কাউকে করতে দেওয়া হবে না। যদি কেউ করে থাকে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রবিউল হক জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিলনা। শুধু চিলেকোঠা রেস্টুরেন্ট না এ অঞ্চলের কোন জায়গায় অশ্লীলতা ও অপকর্ম করতে দেওয়া হবে না।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিল্লোল চাকমা বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। অচিরেই সেখানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো অবস্থাতেই এমন অসামাজিক কার্যকলাপ বরদাশত করা হবে না।