নারায়ণগঞ্জের বন্দরে সাম্প্রতিক সময়ে প্রতারকদের ছড়াছড়ির ঘটনায় শংকিত ও আতংকিত রয়েছে জনসাধারণ। একাধিক ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারস্থ হয়েও প্রতারকদের বিরুদ্ধে তেমন কিছু করতে পারছে না। যার কারণে প্রতারকরা বীরদর্পে প্রতারনা করে যাচ্ছে এবং যারা ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি তাদের বিভিন্ন ভাবে হুমকী ধামকী দিয়ে হয়রানী করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায়, বন্দর উপজেলার স্বল্পের চর এলাকার আলম মিয়ার স্ত্রী নাসিমা বেগম (৪০), বাগবাড়ি এলাকার রাজুর স্ত্রী রূপালী আক্তার (৩২), আবুল প্রধানের ছেলে আলমগীর (৪৮), কামাল প্রধান (৪৬), সামাদ মিয়ার মেয়ের জলি বেগম (৩৬), ইয়াছিন মিয়ার ছেয়ে রফিক শেখ (৫৫), কামালের স্ত্রী অন্তরা ইসলাম নিপা (৩৫) সহ আরো কয়েকজন প্রতারক বিভিন্ন মানুষকে বিদেশে নেওয়ার কথা বলে টাকা আত্মসাৎ, ভুয়া স্ট্যাম্প ও জাল দলিল সৃজনের মাধ্যমে প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে মিথ্যা অভিযোগে মামলা মোকদ্দমা করে হয়রানী সহ মানুষকে নারী দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে যাচ্ছে প্রতারক চক্রটি। তাদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি প্রতারনার মামলা হলেও পুলিশ তেমন কোন ব্যবস্থা নেয়নি। বরং প্রতারকরা কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ বা মামলা করলে তখন পুলিশ অপরাধীদের পক্ষ অবলম্বন করে উল্টো ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিদের হয়রানী করারও অভিযোগ রয়েছে। আইন শঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রে জানা যায় রূপালী, কামাল, আলমগীর, নিপা, রাজু, নাসিমা, রফিক, জলি, হাফিজুর গংদের বিরুদ্ধে থানায় এবং আদালতে মামলা রয়েছে। এরমধ্যে কামাল, নিপা ও রাজুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি রয়েছে। প্রতারক চক্রটি বিভিন্ন সময় বাসস্থানের ঠিকানা পরিবর্তন করারও অভিযোগ রয়েছে। বন্দরের বাগবাড়ি ছাড়াও নারায়ণগঞ্জের ভূইয়ারবাগ, মিশনপাড়া, সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি, কেরানীগঞ্জের ব্রাহ্মনগাওসহ আরো কয়েকটি ঠিকানা ব্যবহার করছে। সূত্র জানায় কামাল, নিপা ও হাফিজুর কেরানীগঞ্জের কোন্ডা ইউনিয়নের ব্রাহ্মনগায়ে রয়েছে এবং বাগবাড়ি এলাকায় রূপালী, আলমগীর, রাজু ও জলি বসবাস করে। এছাড়া রফিক শেখ থাকেন মিশনপাড়া আর নাসিমা থাকে স্বল্পের চর এলাকায়। ভূইয়ারবাগ নন্দীপাড়া এলাকায় জলি ও আলমগীরের পদচারনা রয়েছে বলে জানা গেছে। এই প্রতারকচক্রের বিরুদ্ধে প্রতারনার সিআর মামলা নং-৩১৫/২৩, বন্দর থানার নন প্রসিকিউশন মামলা নং-১৮/২৪। নারায়ণগঞ্জ আদালতের মামলা নং-১৮৯/২৪ এবং সিআর মামলা নং-৯৭/২৫ সহ নারায়ণগঞ্জ, সিদ্ধিরগঞ্জ, বন্দর ও ফতুল্লা থানায় একাধিক জিডি রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। নারায়ণগঞ্জ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সুপারের কাছেও উল্লেখিত প্রতারক চক্রদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিখিত অভিযোগ রয়েছে। একটি সূত্র জানায় ইতিমধ্যে প্রতারকচক্রের মুল হোতা কামাল প্রধান প্রায় ৯টি মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেলহাজতে রয়েছে। দুটি মামলায় ৮ মাস ও ১ বছরের সাজা পরোয়ানায় নারায়ণগঞ্জ কারাগারে আটক রয়েছে। উল্লেখিত প্রতারকচক্রের মধ্যে মহিলারা মানুষের চরিত্র হরন করে এবং অপপ্রচার চালিয়ে মানুষকে জিম্মিদশার মধ্যে ফেলেছে। বর্তমানে প্রতারকরা আইন কানুন কিছুই মানছে না। বরং কতিপয় অসাধু পুলিশের ছত্র ছায়ায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে।