ঢাকা ১১:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তিনি লাইসেন্সধারী দালাল, হাতান তিনগুণ টাকাও

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০৯:১৪:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫
  • ১৩৫ বার পড়া হয়েছে

{"remix_data":[],"remix_entry_point":"challenges","source_tags":["local"],"origin":"unknown","total_draw_time":0,"total_draw_actions":0,"layers_used":0,"brushes_used":0,"photos_added":0,"total_editor_actions":{},"tools_used":{"transform":1},"is_sticker":false,"edited_since_last_sticker_save":true,"containsFTESticker":false}

সরকারি অফিসগুলোর বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ নতুন নয়। সেবাপ্রার্থীরা নিয়মিতই এসব স্থানে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। শুধু তাই নয়, সীমাহীন ভোগান্তি পোহানোর পাশাপাশি গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকাও৷ বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)- এর নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের চিত্রও ভিন্ন নয়। একশ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে সারাদিনই এখানে থাকে চিহ্নিত দালালদের আনাগোনা৷ জনসাধারণের কাছ থেকে নিয়মিত ফি এর চেয়ে দ্বিগুণ-তিনগুণ অর্থ হাতিয়ে নেন তারা, করেন হয়রানি৷ বেশ কয়েকজন দালালের মধ্যে শান্ত বাবু নামের এক দালালের যন্ত্রণায় দীর্ঘদিন ধরে অতিষ্ঠ কার্যালয়টির অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সেবাপ্রার্থীরাও৷

অনুসন্ধানে জানা যায়, নিজেকে কখনো অ্যাডভোকেট, কখনোবা এ্যাডভোকেটের সহকারী পরিচয় দিয়ে দালালি চালিয়ে যাচ্ছেন বাবু৷ ফতুল্লার তল্লার বাসিন্দা বাবু নাম ভাঙান নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতিরও৷ ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে আসা জনসাধারণের কাছ থেকে নানা অজুহাতে হাতিয়ে নেন নির্দিষ্ট ফী এর দ্বিগুণ-তিনগুণ টাকা। এরপর ঘুরাতে থাকেন মাসের পর মাস। ভুক্তভোগী যখন বুঝতে পারেন যে, তিনি দালালের খপ্পরে পড়েছেন, তখন বাবু দিতে থাকেন হুমকি। এরকমই একাধিক ঘটনা জানা যায় ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে৷

নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা আলআমিন নামের এক তরুণ জানান, ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে সাধারণত সাড়ে চার হাজার টাকা লাগে। দালাল বাবুর খপ্পরে পড়ে তাকে আমি সাড়ে নয় হাজার টাকা দিয়েছিলাম। বাবু তিন দিনের মধ্যে লাইসেন্স করে দেওয়ার কথা বলে আমাকে সাড়ে চার মাস ঘুরিয়েছে৷ এই বিষয়ে তাকে তাগাদা দিলেই সে বিভিন্ন হুমকি দিয়েছে৷ দ্বিগুণেরও বেশি টাকা দিয়েও সময়মতো লাইসেন্স না পাওয়ায় আমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি৷

এ বিষয়ে দালাল বাবুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দালালির পক্ষে সাফাই গাইতে গিয়ে বলেন, আমার কাছে কোর্টের কার্ড আছে, লাইসেন্স আছে। আমরা চাইলেই বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারি।

নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতি তাকে এই ধরনের কাজ করার অনুমতি দিয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা যেহেতু কোর্টে থাকি আর কোর্টের সাথেই অফিস, তাই আমরা এসব কাজ করতেই পারি৷

বাড়তি টাকা নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ধরেন বাড়তি যে সাড়ে চার হাজার টাকা নিছি সেইটা আমার লাভ, আমি খেয়ে ফেলছি৷

দালাল বাবুর যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ কার্যালয়টির অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীই৷ নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, কখনো আইনজীবী, কখনোবা আইনজীবীর সহকারী পরিচয়ে বাবু বিআরটিএ- এর কার্যালয়কে দালালদের স্বর্গরাজ্য বানিয়েছে। কার্যালয়ের কয়েকজন অসাধু-দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীও তার সাথে জড়িত৷

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির ঘটনার বিবরণ জেনে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, সব মুহুরিকে তো আসলে চেনা বা মনে রাখা সম্ভব না।

খবর টি শেয়ার করুন :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Munna Khan

সর্বাধিক পঠিত

ব্লাড নিয়ে প্রতারণার বিরুদ্ধে কুমিল্লার স্বেচ্ছাসেবীদের মানববন্ধন

তিনি লাইসেন্সধারী দালাল, হাতান তিনগুণ টাকাও

প্রকাশের সময় : ০৯:১৪:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫

সরকারি অফিসগুলোর বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ নতুন নয়। সেবাপ্রার্থীরা নিয়মিতই এসব স্থানে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। শুধু তাই নয়, সীমাহীন ভোগান্তি পোহানোর পাশাপাশি গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকাও৷ বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)- এর নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের চিত্রও ভিন্ন নয়। একশ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে সারাদিনই এখানে থাকে চিহ্নিত দালালদের আনাগোনা৷ জনসাধারণের কাছ থেকে নিয়মিত ফি এর চেয়ে দ্বিগুণ-তিনগুণ অর্থ হাতিয়ে নেন তারা, করেন হয়রানি৷ বেশ কয়েকজন দালালের মধ্যে শান্ত বাবু নামের এক দালালের যন্ত্রণায় দীর্ঘদিন ধরে অতিষ্ঠ কার্যালয়টির অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সেবাপ্রার্থীরাও৷

অনুসন্ধানে জানা যায়, নিজেকে কখনো অ্যাডভোকেট, কখনোবা এ্যাডভোকেটের সহকারী পরিচয় দিয়ে দালালি চালিয়ে যাচ্ছেন বাবু৷ ফতুল্লার তল্লার বাসিন্দা বাবু নাম ভাঙান নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতিরও৷ ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে আসা জনসাধারণের কাছ থেকে নানা অজুহাতে হাতিয়ে নেন নির্দিষ্ট ফী এর দ্বিগুণ-তিনগুণ টাকা। এরপর ঘুরাতে থাকেন মাসের পর মাস। ভুক্তভোগী যখন বুঝতে পারেন যে, তিনি দালালের খপ্পরে পড়েছেন, তখন বাবু দিতে থাকেন হুমকি। এরকমই একাধিক ঘটনা জানা যায় ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে৷

নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা আলআমিন নামের এক তরুণ জানান, ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে সাধারণত সাড়ে চার হাজার টাকা লাগে। দালাল বাবুর খপ্পরে পড়ে তাকে আমি সাড়ে নয় হাজার টাকা দিয়েছিলাম। বাবু তিন দিনের মধ্যে লাইসেন্স করে দেওয়ার কথা বলে আমাকে সাড়ে চার মাস ঘুরিয়েছে৷ এই বিষয়ে তাকে তাগাদা দিলেই সে বিভিন্ন হুমকি দিয়েছে৷ দ্বিগুণেরও বেশি টাকা দিয়েও সময়মতো লাইসেন্স না পাওয়ায় আমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি৷

এ বিষয়ে দালাল বাবুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দালালির পক্ষে সাফাই গাইতে গিয়ে বলেন, আমার কাছে কোর্টের কার্ড আছে, লাইসেন্স আছে। আমরা চাইলেই বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারি।

নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতি তাকে এই ধরনের কাজ করার অনুমতি দিয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা যেহেতু কোর্টে থাকি আর কোর্টের সাথেই অফিস, তাই আমরা এসব কাজ করতেই পারি৷

বাড়তি টাকা নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ধরেন বাড়তি যে সাড়ে চার হাজার টাকা নিছি সেইটা আমার লাভ, আমি খেয়ে ফেলছি৷

দালাল বাবুর যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ কার্যালয়টির অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীই৷ নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, কখনো আইনজীবী, কখনোবা আইনজীবীর সহকারী পরিচয়ে বাবু বিআরটিএ- এর কার্যালয়কে দালালদের স্বর্গরাজ্য বানিয়েছে। কার্যালয়ের কয়েকজন অসাধু-দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীও তার সাথে জড়িত৷

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির ঘটনার বিবরণ জেনে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, সব মুহুরিকে তো আসলে চেনা বা মনে রাখা সম্ভব না।