মোয়াজ্জেম হোসেন হিলারী, বকশীগঞ্জ প্রতিনিধি।। বকশীগঞ্জের একমাত্র নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খাতেমুন মঈন মহিলা ডিগ্রী কলেজে অনেক নাটকীয়তার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে পুনঃবহাল করা হয়েছে বহিষ্কৃত অধ্যক্ষ বজলুল করিম তালুকদার কে। তথ্যসূত্রে জানা যায়, বকশীগঞ্জ পৌর এলাকার পাখিমারা গ্রামে ১৯৯৪ সালে খাতেমুন মঈন মহিলা ডিগ্রী কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। সে সময়ে কলেজের অবকাঠামোগত কিছু উন্নয়ন হয়। এরমধ্যে ২০২৫ সাল পর্যন্ত কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি নির্বাচিত হন নিহারুন নাহার বিলকিস। গত ০৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর ডক্টর ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হলে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি নিহারুন নাহার বিলকিসকে অপসারণ করা হয় এবং প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময়ের আগেই সভাপতির পদ ছাড়তে বাধ্য হন নিহারুন নাহার বিলকিস। তারস্থলে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অহনা জিন্নাত। পরবর্তীতে অধ্যাপক মমতাজ বেগমকে সভাপতি ও গোলাম রব্বানী কে বিদ্যোৎসাহী সদস্য, জনাব শামীমা কাইয়ুম কে হিতোষী সদস্য, মোহাম্মদ রোকনুজ্জামানকে শিক্ষক প্রতিনিধির সদস্য করে ০১/০৪/২০২৫ তারিখ পর্যন্ত এডহক কমিটি মনোনীত করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কিন্তু ০২/১২/২০২৪ তারিখে এডহক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মমতাজ বেগমের স্থলে এম রশিদুজ্জামান মিল্লাতকে সভাপতি করে আবার পত্র জারি করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত এডহক কমিটির সভাপতি মনোনীত হয়েই এডহক কমিটির সভার সম্মতি ক্রমে গত ০৭/১২/২০২৪ তারিখে অধ্যক্ষ বজলুল করিম শাহিন তালুকদার কে সাময়িক বরখাস্ত করেন একই সময়ে কলেজের কৃষিশিক্ষা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ আল মোকাদ্দেছকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করেন। শুরু হয় বিতর্ক। অনেকেই মন্তব্য করেন দাতা সদস্যদের ব্যতীত এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত নিয়ম বহির্ভূতভাবে এডহক কমিটির সভাপতি মনোনীত হয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলেজের এক শিক্ষক জানান অধ্যক্ষ কে বহিষ্কার করা সম্পূর্ণ ক্ষমতার অপব্যবহার মাত্র। এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত সম্পূর্ণ বে-আইনি নিয়ম বহির্ভূত ভাবে তা করেছেন। অবশেষে ১৮/১২/২০২৪ তারিখে এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত এর স্থলে অধ্যাপক মমতাজ বেগমকে পুনরায় এডহক কমিটির সভাপতি মনোনীত করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ সময় জাতীয় দৈনিক অনুসন্ধান প্রতিদিন সহ স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকে খাতেমুন মঈন মহিলা ডিগ্রী কলেজের এডহক কমিটি নিয়ে তামাশা শিরোনামে বিভিন্ন খবরাখবর ছাপা হয়। অধ্যাপক মমতাজ বেগম পুনরায় এডহক কমিটির সভাপতি মনোনীত হয়ে বিগত ১৯/১২/২০২৪ তারিখে বিধি বহির্ভূত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে অব্যাহতি প্রদান পূর্বক অধ্যক্ষ জনাব মোঃ বজলুল করিম তালুকদার এর সাময়িক বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেন এবং চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ প্রদান করেন। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সরকার রাসেল জানান এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত বিধি বহির্ভূতভাবে বজলুল করিম তালুকদার কে বহিষ্কার করেছিলেন। বর্তমান এডহক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মমতাজ বেগম তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন এবং চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছেন। মহিলা কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থীরা জানান সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে আমাদের অধ্যক্ষ স্যারকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছিল। স্যারকে স্বপদে বহাল করায় আমরা আনন্দিত। ছাত্রীরা আরও জানান আমরা ইতিপূর্বে অধ্যক্ষ স্যারকে স্ব-পদে বহালের জন্য মানববন্ধন সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছি। মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ বজলুল করিম তালুকদার এর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের বিষয়ে জানতে চেয়ে এডহক কমিটির বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক মমতাজ বেগমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত সাহেবের সম্বন্ধে আমার তেমন কিছু জানা নেই তিনি কিভাবে একজন অধ্যক্ষকে বহিষ্কার করেছিলেন সেটা তিনি ভালো বলতে পারবেন।
সর্ব শেষ:
খাতেমুন মঈন মহিলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার।
-
প্রতিবেদক এর নাম
- প্রকাশের সময় : ০৪:১৪:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪
- ১২৫ বার পড়া হয়েছে
খবর টি শেয়ার করুন :
সর্বাধিক পঠিত