পরিবেশবান্ধব সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে আব্দুল আজিজ ফাউন্ডেশন আজ বিকেল ৪টায় চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার সুজাতপুরে ব্যাপক পরিসরে ফলজ ও ঔষধি গাছ রোপণ করেছে। স্থানীয় একটি মাদ্রাসাসাতবাড়িয়া গাউছিয়া কমপ্লেক্স ও এতিমখানা প্রাঙ্গণ ঘিরে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে আম, লিচু, মুন্ডাফল, আমড়া, পেয়ারা, জলপাইসহ মোট সাত প্রজাতির ৩০০-এর বেশি উন্নত জাতের চারা মাটিতে পোঁতা হয়।
প্রতিষ্ঠার পটভূমি
২০২৩ সালের ১ মে সমাজসেবী মোঃ কবির বেপারী তাঁর প্রয়াত পিতা, শিক্ষানুরাগী ও মানবহিতৈষী আব্দুল আজিজ বেপারীর স্মৃতিকে অমর করে রাখতে “আব্দুল আজিজ ফাউন্ডেশন”-এর যাত্রা শুরু করেন। স্বল্প সময়েই সংস্থাটি শিক্ষাবৃত্তি, রক্তদান, শীতবস্ত্র বিতরণ ও দুর্যোগ সহায়তার মতো নানা কর্মসূচি চালু করে এলাকার মানুষের আস্থা অর্জন করেছে।
আজকের আয়োজনের মূল লক্ষ্য
ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সদস্য প্রকৌশলী ফয়েজ আহামেদ (মাহিন) জানান,
“মেঘনা-ধনাগোদার তীরবর্তী এ অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও লবণাক্ততার ঝুঁকি বিবেচনায় গাছ লাগানো শুধু শৌখিনতা নয়, টিকে থাকার লড়াই। আমাদের লক্ষ্য—পরবর্তী প্রজন্মকে একটি সবুজ, নিরাপদ পরিবেশ তুলে দেওয়া।”
পরিবেশগত সুবিধার পাশাপাশি স্থানীয় অর্থনীতিতে ফলজ চাষের ইতিবাচক প্রভাব তুলে ধরে তিনি যোগ করেন,
“৫-৬ বছরের মধ্যে এই গাছগুলো পরিবারগুলোর বাড়তি আয়ের উৎস হবে।”
অংশগ্রহণ ও সমন্বয়
কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন ফাউন্ডেশনের আরেক নির্বাহী সদস্য মোঃ হাসান বেপারী ও রেজাউল হোসাইন। সহযোগিতা করেন সুজাতপুর নুরানী মাদ্রাসার মোহতামিম মোঃ মাহবুব হোসেন ও শিক্ষার্থীরা। স্থানীয় সুধীজনরা জানান,
“এত বড় পরিসরে সংগঠিত ও পরিকল্পিত বৃক্ষরোপণ আমাদের গ্রামে এই প্রথম। সবাই মিলে গাছগুলো রক্ষার দায়িত্বও আমরা ভাগ করে নিয়েছি।”
আগামীর পরিকল্পনা
ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মোঃ কবির বেপারী ভার্চুয়াল বার্তায় জানান, চলতি বছরের মধ্যেই তারা উপজেলার ছয়টি বিদ্যালয় ও দুটি ঈদগাহ মাঠে আরও ১,০০০ গাছ লাগানোর রোডম্যাপ চূড়ান্ত করেছে। অবশিষ্ট জলবায়ু-সহনশীল প্রজাতি খুঁজে বের করতে কৃষিবিদদের সঙ্গে যৌথ গবেষণাও চালাচ্ছে ফাউন্ডেশন।
স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া
সুজাতপুরের বাসিন্দা শাহিনা আক্তার বলেন,
“গরমে লিচু গাছের ছায়া আর ফল; দুই-ই পেতে সন্তানরা মুখিয়ে আছে। সুযোগ পেয়ে আমরা নিজেরাও দুই-তিনটি চারা নিয়েছি।”
সমাপনী
আজকের সফল বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি শুধু তাৎক্ষণিকই নয়, দীর্ঘমেয়াদে সুজাতপুর ও আশেপাশের এলাকায় সবুজায়ন, খাদ্যস্বয়ংসম্পূর্ণতা ও পরিবেশসুরক্ষায় দৃঢ় অবদান রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেছে আব্দুল আজিজ ফাউন্ডেশন। সংগঠনটি প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীকে গাছের পরিচর্যা-বিষয়ক নির্দেশিকা ও তিন মাস অন্তর ফলো-আপ পরিদর্শনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।